Drug License


ফার্মেসী ব্যবসা ভাল আয়ের পথ হতে পারে

ভালো আয়ের পথ হতে পারে ওষুধের দোকান। পাড়া-মহল্লাতেই দিতে পারেন ওষুধের দোকান। ফার্মেসি দিতে চাইলে আপনাকে একটা ফাউন্ডেশন কোর্স করতে হবে, দোকান নিতে হবে। দোকানের ব্যবস্থা হলে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য সরকারের ওষুধ প্রশাসন পরিদপ্তরে আবেদন করতে হবে

ফার্মাসিস্ট ফাউন্ডেশনের কোর্স
ড্রাগ লাইসেন্সের রেজিস্ট্রেশন হয় তিনটি ক্যাটাগরিতে। গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের দেওয়া হয়   ক্যাটাগরির লাইসেন্স, ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের দেওয়া হয় বি  ক্যাটাগরির লাইসেন্স এবং দুই মাসের শর্টকোর্স সম্পন্নকারীদের দেওয়া হয় সি  ক্যাটাগরির লাইসেন্স। দুই মাসের শর্টকোর্সটি করানো হয় বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির তত্ত্বাবধানে। দেশের ৬৪টি জেলাই রয়েছে এই সমিতির শাখা
ঢাকার মিটফোর্ড রোডে অবস্থিত সমিতির প্রধান কার্যালয় ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে এর ১৭টি উপশাখা। এর যেকোনো একটি থেকে কমপক্ষে এসএসসি পাসকৃতরা কোর্সটি করতে পারেন। সর্বমোট ৪০টি ক্লাস করানো হয়। ক্লাস শেষে দুই ঘণ্টার একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। কোর্সটির ফি সর্বমোট এক হাজার ৭৫০ টাকা। যেহেতু প্রশিক্ষণার্থী ভর্তি করার নির্দষ্টি কোনো সময় নেই, তাই যারা কোর্সটি করতে চান তাদের নিকটস্থ শাখায় নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে হবে

ড্রাগ লাইসেন্স করতে
ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে বেশ কিছু কাগজও জমা দিতে হবে। এর মধ্যে আছে-
ট্রেড লাইসেন্স
চেয়ারম্যান প্রদত্ত নাগরিকত্বের সনদ
ব্যাংক সলভেন্সি সনদ
দোকানসংক্রান্ত কাগজপত্র (নিজস্ব দোকান হলে দোকানের দলিলপত্র বা ভাড়া নেওয়া হলে চুক্তিসংক্রান্ত কাগজপত্র)
এক হাজার ৫০০ টাকার ট্রেজারি চালান
যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ফার্মেসি বিষয়ে সম্মান শ্রেণী পাসের সনদ অথবা প্যারামেডিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা পাসের সনদ অথবা ফার্মাসিস্ট ফাউন্ডেশন কোর্সের সনদ

দরকার পুঁজি
আসবাবপত্র এবং ওষুধ কেনার জন্য প্রাথমিকভাবে এক লাখ টাকা পুঁজি থাকলেই ওষুধের দোকান দেওয়া সম্ভব। সে ক্ষেত্রে বেশি প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো দিয়েই শুরু করতে হবে। খুব বেশি দামি এবং অপ্রচলিত ওষুধ প্রাথমিকভাবে না রাখাই উচিত


দোকান সাজান
দোকানের আকারের সঙ্গে সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওষুধ রাখার তাক বানাতে হবে। কিছু সাধারণ পরীক্ষণ যন্ত্র, যেমন থার্মোমিটার (তাপমাত্রা মাপক যন্ত্র), স্টেথিস্কোপ (হূদস্পন্দন মাপক যন্ত্র), স্ফিগমোম্যানোমিটার (রক্তচাপ মাপক যন্ত্র) রাখতে হবে


কোথা থেকে কী কিনবেন
কাছের যেকোনো কাঠের দোকান থেকে তাক তৈরি করাতে পারবেন। ওষুধ কিনতে হলে আপনাকে যেতে হবে ঢাকার মিটফোর্ড রোডে। এখানে আপনি সব ধরনের ওষুধ পাইকারি দরে কিনতে পারবেন। ছাড়া কম্পানি থেকেও সরাসরি কিনতে পারেন। তবে কম্পানি থেকে কিনতে চাইলে প্রতিটি ওষুধ আপনাকে এক বাক্স কিনতে হবে
স্টেথিস্কোপ, থার্মোমিটার, স্টিগমোম্যানোমিটারের জন্য যেতে হবে জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীতে তোপখানা রোডে অবস্থিত বিএমএ ভবনে


দরদাম
আকার অনুযায়ী ওষুধের তাক বানাতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ পড়বে। স্বয়ংক্রিয় থার্মোমিটারের দাম পড়বে ৪০ থেকে ১০০ টাকা। স্টেথিস্কোপ এবং স্ফিগমোম্যানোমিটার দুটি একসঙ্গে এবং আলাদাভাবে কিনতে পাওয়া যায়। একসঙ্গে সাধারণ যন্ত্রটির দাম পড়বে এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার টাকা। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটি পাওয়া যাবে তিন হাজার ৮০০ থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে। আলাদাভাবে কিনতে গেলে প্রতিটি স্টেথিস্কোপের দাম পড়বে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা আর স্ফিগমোম্যানোমিটারের দাম পড়বে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। বাংলাদেশে থাইল্যান্ড, চীন এবং জাপানের তৈরি এসব পরিমাপক যন্ত্র পাওয়া যায়। তবে জাপানের তৈরি যন্ত্রই ভালো


ওষুধ সংরক্ষণ পদ্ধতিও জানা থাকতে হবে

ব্যাপারে জনাব ওমর ফারুক কি বলেন দেখি, তিনি স্বত্বাধিকারী, স্টার মেডিক্যাল, গ্রীণ রোড, ঢাকা। তিনি বলেন ফার্মেসি দিতে চাইলে বিভিন্ন ওষুধ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। শুধু ওষুধের নাম জানলেই হবে না। কোন ওষুধ কী কাজে লাগে সে সম্পর্কেও জানতে হবে। প্রথম দিকে অল্প পুঁজি দিয়েও ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সাধারণ দোকানের তুলনায় ফার্মেসি বেশ সম্মানজনক ব্যবসা। এখানে লাভও ভালো। কম্পানিভেদে বিক্রির উপর ১২ থেকে ১৩ পার্সেন্ট লাভ থাকে। হিসাবে প্রথম দিকে দুই লাখ টাকা পুঁজিতে মাসে দশ থেকে পনের হাজার টাকা লাভ থাকে। রোগীরা চাইলেও অনুমানে কোনো ওষুধ বিক্রি করা ঠিক হবে না। কিছু কিছু ওষুধ ফ্রিজে না রাখলে নষ্ট হয়ে যায়, তাই ওষুধ ভালোভাবে সংরক্ষণ পদ্ধতিও জানা থাকতে হবে। একই ক্যাটাগরির বিভিন্ন কম্পানির ওষুধ একসঙ্গে রাখলে খুঁজে পেতে সুবিধা হবে


ড্রাগ লাইসেন্স পেতে চাইলে

ওষুধের দোকান খুলে বৈধভাবে ওষুধের ব্যবসা করতে চাইলে ড্রাগ লাইসেন্স নেয়া জরুরি বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ঔষধ প্রশাসনের কাছ থেকে ড্রাগ লাইসেন্স নিতে হয়
আবেদন ফরম দরকারি কাগজপত্র
ঔষধ প্রশাসনের নির্ধারিত ফরম- এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। সাথে যেসব কাগজপত্র জমা দিৃতে হয়-
#
ব্যাংক স্বচ্ছলতার সনদপত্র
#
লাইসেন্স ফি জমা দেয়ার ট্রেজারী চালান
#
দোকান ভাড়ার রসিদ বা চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। নিজস্ব দোকান হলে দলিলের ফটোকপি।
#
ফার্মাসিস্টের অঙ্গীকারপত্র
#
পৌর এলাকার ক্ষেত্রে ট্রেড
লাইসেন্সের কপি

ছয় মাস মেয়াদী কোর্স
ফার্মাসিস্টের সনদের জন্য ফার্মেসী কাউন্সিল থেকে ছয় মাস মেয়াদী একটি কোর্স করতে হয়। তিন মাস পর পর ঔষধ প্রশাসনের সভা হয়, যেখানে তথ্যগুলো যাচাই সাপেক্ষে লাইসেন্স দেয়া হয়।

লাইসেন্স ফি
লাইসেন্স ফি ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হয়। পৌর এলাকার জন্য এই ফি ,০০০ টাকা এবং পৌর এলাকার বাইরে ,৫০০ টাকা।
দুবছর পর পর লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। পৌর এলাকার জন্য নবায়ন ফি ,০০০ টাকা এবং পৌর এলাকার বাইরে এটি ,০০০ টাকা।

প্রয়োজনীয় সময়
নতুন লাইসেন্স নিতে হলে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে যাচাই বাছাইয়ের জন্য। আর লাইসেন্স নবায়নের জন্য পাঁচ থেকে সাত কর্ম দিবস অপেক্ষা করতে হয়।

যোগাযোগ : ঔষধ প্রশাসন
১০৫-১০৬, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ফোন : ৮৮০--৯৫৫৬১২৬, ৯৫৫৩৪৫৬
ফ্যাক্স : ৮৮০--৯৫৬৮১৬৬
-মেইল : drugs@citech.net
ওয়েবসাইট : www.dgda.gov.bd